SM IT

নারীর পর্দা কেমন হবে?
- লিখেছেনঃ মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম আশরাফী

পর্দা শব্দের আরবি প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘হিজাব’। এর শাব্দিক অর্থ প্রতিহত করা, বাধা দান করা, গোপন করা, আড়াল করা, ঢেকে রাখা ইত্যাদি। ইসলামের পরিভাষায় প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের আপাদমস্তক পরপুরুষ থেকে ঢেকে রাখাকে ‘হিজাব’ বা পর্দা বলে। একজন মুসলিম নারীর জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পর্দা করা, এমনকি এটি নামাজ, রোজার চাইতেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নারীর পর্দা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে-

يا ايها النبى قل لازواجك وبناتك ونساء المؤمنين يدنين عليهن من جلبيبهن ذالك أدني ان يعرفن فلا يؤذين وكان الله غفورا رحيما

অর্থাৎ- “হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে ও মুমিনদের নারীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদের উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা আহযাব : ৫৯)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা মুমিন নারীদেরকে আদেশ করেছেন যখন তারা কোন প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবে তখন যেন মাথার উপর থেকে ওড়না বা চাদর টেনে স্বীয় মুখমন্ডল আবৃত করে। আর (চলাফেরার সুবিধার্থে) শুধু এক চোখ খোলা রাখে। (ফাতহুল বারী)

ইসলামী শরীয়তে পর্দা অনেক ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়। শুধু বোরকা পরিধাণ করে বাইরে চলাফেরা করাই পর্দা নয়। বরং পরপুরুষের সাথে মোহনীয় ভঙ্গিতে কথা বলা বা সুগন্ধী ব্যবহার করে পরপুরুষকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা ইত্যাদি কাজও পর্দার খেলাফ। এমনকি ইসলামে নারীদেরকে মাটিতে শব্দ করে হাটতেও নিষেধ করা হয়েছে।

ولا يضربن بارجلهن ليعلم ما يخفين من زينتهن وتوبوا الى الله جميعا ايه المؤمنون لعلهم تفلحون

অর্থাৎ- “তারা যেনো তাদের গোপন সাজসজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর সামনে তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।” (সূরা নূর : ৩১)

তবে এতো কঠিন নিয়ম নীতির কারণে নারীদের ভয় পাওয়ার বা হীনমন্যতায় ভোগার কোন কারণ নেই। নারীরা তাদের প্রয়োজনীয় স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারবে তবে তা পর্দা মেইনটেইন করে। এবং তাদের কোন কাজের উদ্দেশ্যই যেন পরপুরুষকে আকৃষ্ট করার জন্য না হয়, এতটুকু খেয়াল করে চললেই হবে।

নারীর সাজসজ্জাতে ইসলামে বারণ নেই। তবে একজন নারী সাজবে এবং তার সৌন্দর্য্য প্রদর্শণ করবে শুধুই তার স্বামীকে। অন্যান্য নারীদেরকে নিজের সৌন্দর্য্য বা সাজসজ্জা প্রদর্শণ করা পর্দার খেলাফ নয়। তবে নিজের সৌন্দর্য্য বা দামী গহনার জন্য অহংকার বোধ করা অনুচিত। এটি তাকওয়া পরিপন্থি কাজ।

বর্তমানে অনেক নারীরা এমন আটোসাটো বোরকা পরিধান করে যা দ্বারা মোটেও পর্দার উদ্দেশ্য সাধিত হয় না। বোরকা হতে হবে ঢিলাঢালা এবং বোরকার মধ্যে বিভিন্ন ফ্যাশনেবল ডিজাইন করা অনুচিত।

Post a Comment

Post a Comment